শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ উপায় ও ঘরোয়া চিকিৎসা
শরীরের দুর্বলতা দূর করার উপায় : আমাদের জীবনধারা এবং ভুল খাদ্যাভ্যাসের কারণে শারীরিক এবং মানসিক দুর্বলতা সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। শরীরের দুর্বলতার কারণে ব্যক্তি কোনো কাজে ঠিকমতো মনোযোগ দিতে পারে না এবং একই সঙ্গে অসুস্থ দেখাতে শুরু করে। কেউ কেউ শারীরিক দুর্বলতা দূর করার জন্য ওষুধ খান, কিন্তু ওষুধ ছাড়াই দেশীয় আয়ুর্বেদিক এবং ঘরোয়া প্রতিকার গ্রহণ করে আপনি সহজেই শক্তি বাড়াতে এবং শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে পারেন। আসুন শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ উপায় ও ঘরোয়া প্রতিকার সম্পর্কে জেনে নেই।
শারীরিক দুর্বলতা সরাসরি আমাদের কর্মদক্ষতার ওপর প্রভাব ফেলে। শহুরে জীবন ব্যস্ত, যখন বনের আদিবাসীদের একটি নিয়মিত জীবনযাত্রার পাশাপাশি তাদের খাদ্য ও জীবনযাত্রায় গাছপালা অত্যধিক ব্যবহার এবং সম্ভবত এই কারণেই বনবাসীদের গড় বয়স সাধারণ শহুরে মানুষের চেয়ে বেশি।
ক্রমাগত শারীরিক দুর্বলতার অনেক কারণ রয়েছে যার প্রধান কারণ হল শরীরে পুষ্টির অভাব এবং অন্য কারণ হল শরীরে রক্তের অভাব। এর সাথে অক্সিজেন প্রবাহের ঘাটতি বা প্রয়োজন অনুযায়ী শরীরে অক্সিজেন না পাওয়া কারণে মানুষ সারাক্ষণ ক্লান্ত ও দুর্বল বোধ করে।
শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ ঠিকমতো না হলে শরীরে ভারী হওয়া, শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা, ফোলাভাব এবং শ্বাসকষ্টের মতো নানা সমস্যা দেখা দেয়। এখন এমন পরিস্থিতিতে প্রশ্ন জাগে কীভাবে শরীরে অক্সিজেনের প্রবাহ বাড়ানো যায়, তাহলে উত্তর হল আপনার শ্বাসতন্ত্রকে শক্তিশালী ও সুস্থ করে তোলার মাধ্যমে।
দুর্বলতা শারীরিক হোক বা মানসিক, সবার আগে সমস্যার কারণ জানতে হবে, তবেই সঠিক উপায়ে ও সঠিক পথে চিকিৎসা সম্ভব। আপনি যদি শরীরের দুর্বলতা দূর করতে এবং শক্তি বাড়ানোর ওষুধ খাচ্ছেন, তাহলে এখানে লেখা ঘরোয়া প্রতিকারগুলো মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
- শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ উপায় হল খেজুর। খেজুরের বীজ বের করে নিন, এবার মাখন লাগিয়ে খান। এটি প্রতিদিন টানা কয়েকদিন করলে শরীরে অনেক শক্তি ও শক্তি অনুভব করবেন।
- স্নায়ুর দুর্বলতা দূর করতে ও রক্ত বাড়াতে প্রতিদিন ৮-১০টি খেজুর খান এবং এক গ্লাস দুধ পান করুন।
- গাজরের পুডিং শারীরিক শক্তি বৃদ্ধিতেও উপকারী। যদি আপনার শরীর চর্বিহীন, পাতলা এবং দুর্বল দেখায় তবে গাজর খাওয়া উচিত। প্রতিদিন গাজরের রস খাওয়াও একটি ভালো সমাধান।
- পুরুষ দুর্বলতা দূর করতে সকালে মিষ্টি আম খান এবং শুকনো আদা দুধ পান করুন।
- মসুর ডাল, ছোলা এবং সয়াবিন: মসুর ডাল খেলে শরীর প্রোটিন এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টি পায়। এর ফলে শরীরে শক্তি পাওয়ার পাশাপাশি পরিপাকতন্ত্র সুস্থ থাকে।
- শারীরিক দুর্বলতা দূর করতেও দুধ খুবই উপকারী। দুধে ক্যালসিয়াম এবং অন্যান্য অনেক পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যা শরীরে শক্তি বাড়ায়। প্রতিদিন অন্তত এক গ্লাস দুধ পান করতে হবে। দুধ হাড়কেও মজবুত করে।
- শরীরে শক্তি বাড়াতে ডায়েটে কলা রাখুন। কলা প্রাকৃতিক চিনির একটি ভালো উৎস যা শরীরে দ্রুত শক্তি নির্গত করে। প্রতিদিন ২টি কলা খান।
- প্রতিদিন সকালে দুধের সাথে একটি কলা খেলে শরীরে শক্তি ও চর্বি বাড়ে। এটি ওজন বাড়ানো এবং শারীরিক দুর্বলতা দূর করার সহজ উপায় ।
- প্রতিদিন টমেটোর স্যুপ খেলে শরীরে রক্তের অভাব পূরণ হয়। টমেটো খেলে মুখও উজ্জ্বল হতে শুরু করে।
- দুধের মতো দইও দুর্বলতা দূর করতে এবং স্ট্যামিনা বাড়াতে কার্যকর। সর্দি বা গলা ব্যথা হলে দই খাওয়া এড়িয়ে চলুন।
- ডালিমের খোসা শুকিয়ে পিষে নিন, এখন সকালে ও সন্ধ্যায় ১ চা চামচ খান। এই দেশীয় ওষুধ নিয়মিত খেলে দুর্বলতার চিকিৎসা হয়।
- শারীরিক দুর্বলতা দূর করতে এবং শক্তি বাড়াতে প্রতিদিন জাম খান।
- পুরুষের দুর্বলতা দূর করতে প্রতিদিন মাখান খির খান।
- স্নায়ুর দুর্বলতা দূর করতে পানিতে কিছু লবণ মিশিয়ে গুলে এই পানি দিয়ে শরীরে মালিশ করলে মাংসপেশিতে আরাম পাওয়া যায়।
- 10 - 10 গ্রাম জায়ফল এবং গদা নিন, এখন এতে 50 গ্রাম অশ্বগন্ধা যোগ করুন। এই আয়ুর্বেদিক ওষুধটি সকালে ও সন্ধ্যায় 1 চামচ দুধের সাথে খান। এই চিকিৎসা শরীরের দুর্বলতা দূর করে এবং শরীরে রক্তের অভাব দূর করতেও সাহায্য করে।
- বাবা রামদেবও দুর্বলতার চিকিৎসার জন্য পতঞ্জলির আয়ুর্বেদিক ওষুধ খেতে পারেন। ওষুধ শুরু করার আগে, এর গ্রহণের পদ্ধতি এবং পরিমাণ জেনে নিন।
- আপনার তথ্যের জন্য, উপরে উল্লিখিত প্রেসক্রিপশনগুলি শুরু করার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত।
নিয়মিত কম্পিউটারে বসে থাকা, অনিয়মিত খাওয়ার সময় এবং একটি চাপপূর্ণ জীবন আমাদের মানসিক এবং শারীরিকভাবে ক্লান্ত করে তোলে। দুর্বলতার অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে অত্যধিক ঘাম, ক্ষুধা হ্রাস, মনোযোগ দিতে অসুবিধা এবং পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া।
অনেক সময় শরীরের দুর্বলতা আসে কোনো না কোনো রোগের কারণে, আবার কখনো মানসিক দুর্বলতা আসে স্ট্রেস ও ডিপ্রেশনের কারণে। এ ছাড়া কেউ কেউ বলেন, আমি অনেক খাই-পান করি, কিন্তু শরীর তা অনুভব করে না, যার কারণে শরীর চর্বিহীন হতে থাকে। দরিদ্র পাচনতন্ত্রও খাওয়া-দাওয়া না করার একটি কারণ হতে পারে।