পিরামিড কি?

উত্তর: প্রাচীন মিশর ৫০০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ সময়কালে আদিম নবোপলীয় পর্যায় থেকে বেরিয়ে এসে নগরসভ্যতার পত্তন ঘটায়। মিশরীয় সভ্যতা ছিল বিশ্বের সুপ্রাচীন সভ্যতার আদি ভূমি। ভাবতে অবাক লাগে, সমগ্র বিশ্ব যখন কেবল সভ্যতার দিকে হাঁটাহাটি করছিল, তখন মিশরীয়রা জ্ঞানবিজ্ঞান, শিল্প স্থাপত্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। মিশরীয়দের স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নিদর্শন পিরামিড।
পিরামিড : সভ্যতার ইতিহাসে প্রাচীন মিশরের পরিচিতি প্রতীক হচ্ছে তাঁর স্থাপত্য শিল্প। মিশরীয়দের বলা হয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ নির্মাতা। মিশরীয় ধর্মমতে, মৃত্যু পরবর্তীকালে জীবনের অস্তিত্ব ছিল। সে জীবনে ফারাওয়ের নেতৃত্ব সম্পর্কেও বিশ্বাস ছিল। তাই ফারাওয়ের দেহ সংরক্ষণের জন্য মমি সাধারণভাবে সমাহিত করা হতো। পর জীবনের প্রয়োজনে মৃতদেহের সাথে প্রচুর ধনরত্ন দেয়া হতো। কিন্তু চোর ডাকাত তা মানবে কেন? তাই শক্ত পাথরের ত্রিকোণাকৃতি প্রকাণ্ড সৌধ করা হয়। এ সৌধকে পিরামিড বলা হয়। মিশরে এখনও প্রায় ৭০টি পিরামিড টিকে আছে। মিশরের সবচেয়ে বড় পিরামিডটি নির্মাণ করেন বিখ্যাত ফারাও খুফু। ফারাও খুফু ছিলেন চতুর্থ রাজবংশের দ্বিতীয় ফারাও। তাকে কিওপসও বলা হয়।

পিরামিড তৈরির উপকরণ : কায়রো শহরের দক্ষিণ- পশ্চিমের মরুময় গিছে অঞ্চলে এ বিখ্যাত পিরামিডটি অবস্থিত। পিরামিড তৈরিতে প্রয়োজন ছিল প্রচুর গ্রানাইট এবং চুনাপাথরের। শ্রমিকরা পাহাড় থেকে বৃহৎ পাথর টুকরো টুকরো করে শেজগাড়ির দ্বারা নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে আসত। এমনি করে এক একটি পাথরের উপর পাথর বসিয়ে পিরামিড তৈরি করা হতো। একখণ্ড পাথরের ওজন ছিল প্রায় সত্তর মণ। ভিতরের দেয়ালের পাথরগুলো ছিল সবচেয়ে প্রকাণ্ড। এক একটির ওজন প্রায় ৪৪০ মণ। খুফুর পিরামিড তৈরি করতে লেগেছিল প্রায় তেইশ লাখ পাথর খণ্ড। এ পিরামিডটি তৈরি করতে একলক্ষ শ্রমিকের বিশ বছর সময় লেগেছিল।

উপসংহার : অতএব বলা যায়, মিশরীয় সভ্যতার স্থাপত্য শিল্পের অন্যতম নিদর্শন হলো পিরামিড। মিশরের স্থাপত্য শিল্পের মধ্যে পিরামিডের নির্মাণ কৌশল প্রমাণ করাতে সক্ষম হয় যে, সে সময় শিল্প কৌশল কত উন্নত ছিল ।
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url