গ্রামের জন্য ৬টি অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া | Village Online Business
আপনি কি গ্রামে থেকেই অনলাইনে ব্যাবসা করতে চান? গ্রামে অনলাইন ব্যবসা করার কথা ভাবছেন? তাহলে এই পোস্ট আপনার জন্য।
প্রায়ই সবাই মনে করে যে ব্যবসা কেবল শহরেই করা যায়। কিন্তু আজ আর সেদিন নেই, আপনিও গ্রামে অনলাইন ব্যবসা শুরু করতে পারবেন। তার জন্য জন্য আপনার সামান্য টাকা থাকতে হবে। চলুন জেনে নেই গ্রামের অনলাইন ব্যবসার আইডিয়া সম্পর্কে।
অনলাইন ব্যবসা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম, যার জন্য আপনাকে কোথাও যেতে হবে না, আপনি ঘরে বসে বা গ্রামে অনলাইন ব্যবসা করতে পারেন। আপনি যদি অনলাইনে ব্যবসা করতে চান তবে আপনাকে বেশি খরচ করতে হবে না, আপনার একটি কম্পিউটার বা একটি মোবাইল ফোন থাকতে হবে।
আপনার যদি মোবাইল বা কম্পিউটার থাকে তাহলে আপনি ঘরে বসে সহজেই অনলাইন ব্যবসা করতে পারবেন। আপনি আমার এই লেখা পড়ছেন এর মানে আপনার মোবাইল আছে। সুতরাং, আপনি অনলাইনে ব্যাবসা করার প্রথম ধাপ এগিয়ে আছেন।
গ্রামে অনলাইন ব্যবসা আইডিয়া ২০২২
যে কোনো ধরনের ব্যবসা করতে হলে প্রথমে যেকোনো কিছু বিক্রি করার দক্ষতা থাকতে হবে। বিক্রয় করা ব্যবসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যারা বিক্রয়ে পারদর্শী তাদের কাছে কোনো ব্যবসাই কঠিন নয়।
গ্রাম থেকে ইউটিউবে ভিডিও আপলোড করতে পারেন
শহরের এই দম বন্ধ হওয়া থেকে রেহাই পেতে অনেকেই প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে ইউটিউবে নিয়মিত সার্চ করে। তাই আপনার কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা সুযোগ হচ্ছে ইউটিউবে ও ফেসবুকের জন্য গ্রামীণ ভিডিও বানানো। বর্তমানে এসমস্ত ভিডিওতে কয়েক কোটি পর্যন্ত দর্শক হয়ে থাকে।
আপনার এই সুযোগ মিস করা উচিৎ নয়। আপনি বিভিন্ন ফসল চাষের ভিডিও বা শাকসবজির ব্যাপারে ভিডিও আপলোড করে মনিটাইজেশনের মাধ্যমে আয় করতে পারেন। এটিও গ্রামে অনলাইন ব্যবসার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
আমাদের দেশে বর্তমানে প্রতেক স্থানে সিমের নেটওয়ার্ক যথাক্রমে বেশ ভালো। ভিডিও আপলোডের জন্য উপযোগী।
এছাড়াও ইউটিউবের ভিডিও আপলোডের পাশাপাশি আপনি আপনার এলাকার কৃষি পণ্য বা সবজি গুলো আপনার চ্যানেলের দর্শকের কাছে বিক্রি করতে পারবেন।
আপনি যদি ইউটিবার হতে চান তাহলে এখানে ক্লিক করে এটা পড়তে পারেন সফল ইউটিউবার হওয়ার টিপস্ ২০২২
সবজি ও ফলের ব্যবসা
আজকাল শহরের মানুষের মধ্যে খাটি ফলমূল সবজির চাহিদা বেড়েছে। চারিদিকে ভেজাল পণ্য দেখে তারা হতাশাগ্রস্ত। আর এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে অনেকেই গ্রামের টাটকা ফলমূল অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করে। এই ব্যবসার জন্য আপনার কোন ধরনের শিক্ষা বা দক্ষতার প্রয়োজন নেই। আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কিভাবে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করতে হয় এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার শাকসবজি এবং ফলগুলি তাজা হওয়া উচিত! গ্রামের কৃষকদের থেকে সেগুলো সংগ্রহ করে শহরে পাঠিয়ে খুব ভালো লাভ করতে পারবেন।
ফলের ও শাকসবজির ব্যাবসায় যে বিষয় গুলো খেয়াল রাখতে হবে।
- ফল ও সবজি অবশ্যই টাটকা থাকতে হবে৷ যেনো কাস্টমার আপনার থেকে পরবর্তীতে আবার নিতে আগ্রহী হয়।
- এমন ফল বেছে নেওয়া উচিৎ নয় যা কম সময়ে নষ্ট হয়ে যায়।
- সর্বদা কোয়ালিটির দিকে মনোযোগ দিতে হবে।
আপনি বিভিন্ন মৌসুমে নানান রকমের ফল অনলাইনে বিক্রি করতে পারবেন। যেমন : আম, কাঠাল, লিচু,ড্রাগন ইত্যাদি এছাড়াও অনেকে বিভিন্ন পাহাড়ি ফল নিয়ে অনলাইনে ব্যাবসা করতে দেখা যায়। তবে আপনার গ্রামের যে সমস্ত ফসলের চাষ হয় সেখান থেকে ভালো মানের কিছু বেছে নিতে পারেন।
অনলাইনে গ্রামের হস্তশিল্পর পণ্য বিক্রি
গ্রামে বিভিন্ন পেশার মানুষ আছে যারা আজও বিভিন্ন হাতের কাজ করেন যেমন: তাতী, কাঠমিস্ত্রী, কুমার ও নানান হস্ত শিল্পের মানুষ৷
আপনার প্রথম কাজ যেটি করতে হবে সেটি হচ্ছে গ্রামে ঘুরে ঘুরে ওইসব মৃত শিল্প ও আসবার পত্রের সন্ধান করা যেগুলো সেরা ও সবাই পছন্দ করবে। এরপর সেগুলো অনলাইনে প্রচার করলে মানুষ কিনতে আগ্রহী হবে৷ কেননা এসমস্ত পণ্য এখন বিরল, তাছাড়াও শহরের মানুষ এগুলো পছন্দ করে।
গ্রামের যেসব পণ্য নিয়ে অনলাইনে ব্যাবসা করলে লাভবান হওয়া যাবে
অনেকের অনলাইনে ব্যাবসার দক্ষতা নেই, তাই তারা পেরে ওঠে না৷ তাদের জন্য কিছু পণ্য যা গ্রামে অনলাইন ব্যবসার জন্য গুরুত্বপূর্ণ
- মধূ সংগ্রহকারীদের থেকে খাটি মধু নিয়ে অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন
- নকশীকাঁথা ও বিভিন্ন হাতে তৈরি পোশাকের বেশ চাহিদা আছে সেগুলো অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।
- মৃত শিল্প যেমন মাটির তৈরি নানান আসবাবপত্র বিক্রি করতে পারেন।
- হাতের তৈরি ঘর গোছানোর নানান আসবাবপত্র গ্রামে তৈরি হয় যা মানুষ খুবই পছন্দ করে। সেগুলো বিক্রি করতে পারেন।
- এখনো কাঠের ফার্ণিচার খুবই জনপ্রিয়। আপনি ব্যতিক্রম কিছু ডিজাইনের ফার্নিচার অনলাইনে বিক্রি করতে পারেন।
- কাঠের ঘানিতে ভাঙানো সরিষা, ও নারিকেল তেলের চাহিদা আছে , আপনি৷ গ্রামের কলুদের থেকে তেল সংগ্রহ করে অনলাইন বিক্রি করতে পারেন।
গ্রাম থেকেই অনলাইনে শিক্ষাকতা করে আয়
আপনি যদি শিক্ষিত হয়ে থাকেন তাহলে গ্রামের ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা বা ক্লাস নিয়ে আয় করার পাশাপাশি সেই ক্লাসের রেকর্ড ইউটিউব ও ফেসবুকে আপলোড করে আয় করতে পারেন।
এছাড়াও একটি ব্লগ সাইট বানিয়ে সেখানে লেখালেখি করেও আয় করা যায়। সেজন্য আপনাকে লেখালেখির দক্ষতা ও আপনার একটি ওয়েব সাইট থাকা অবশ্যক।
এছাড়াও আপনি বিভিন্ন পরিচালক বা ডিরেক্টরের জন্য স্কিপ্ট লিখতে পারেন। স্কিপ্ট হচ্ছে সেটা যা ভিডিওতে বলা হবে বা যেটা পড়ে ভিডিও নাটক বা বিজ্ঞাপন করা হয়৷
আপনি প্রথম পর্যায়ে ইউটিউবারদের ভিডিওর জন্য স্কিপ্ট লিখতে পারেন৷ এতেও ভালো পরিমানে আয় করা সম্ভব , কিন্তু এতে আপনাকে মেধাবী হতে হবে।
যদি লেখালেখি করে আয় করতে চান তাহলে এটাও পড়তে পারেন →লেখালেখি বা রাইটিং শিখে উপার্জন করুন
গ্রাম থেকে ফ্রিল্যান্সিং করুন
আজকাল বাংলাদেশের অনেক ছেলে মেয়ে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় যুক্ত হয়েছে। অনেক গ্রামের ছেলে মেয়েরাও গ্রাম থেকে ফ্রিল্যান্সিং করছে। আপনি ইউটিউবের টিউটোরিয়াল দেখেই ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ গুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং, ডাটা এন্টি কনটেন্ট রাইটিং ইত্যাদি
প্রথমে যেকোনো একটি কাজ শিখুন, এবং সেটা করে গ্রাম থেকেই অনলাইনে ভালো পরিমানে আয় করতে পারবেন।
উপসংহার
আমি এই পোস্টে গ্রামে থেকে কিভাবে অনলাইনে ব্যাবসা করবে সে বিষয়ে আলোচনা করেছি। যেখানে আমি বলেছি ফ্রিল্যান্সিং, ইউটিউবিং, লেখালেখি ও শিক্ষাকতা এবং কিভাবে গ্রামীণ পণ্য বা ফলমুল ও হাতের তৈরি পণ্য অনলাইনে বিক্রি করবেন । আশাকরি আপনি উপকৃত হয়েছেন। যদি আপনার মনে কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে কমেন্ট ও ফেসবুকে জানাতে পারেন।