মধ্যযুগে বাংলার ইতিহাসের উৎসমূহে মুদ্রা ও শিলালিপির ব্যবহার
অথবা, মধ্যযুগে বাংলার ইতিহাসে কীভাবে মুদ্রা ও শিলালিপির ব্যবহার হয়েছে লিখ।
ভূমিকা : প্রাচীন বাংলার ইতিহাস রচনায় যেমন- প্রাচীন সাহিত্য, প্রত্নতাত্ত্বিক উপাদান ও বিদেশিদের বিবরণকে পা গুরুত্ব দেওয়া হয় তেমনি মধ্যযুগে বাংলার ইতিহাসে মুদ্রা ও শিলালিপির গুরুত্ব অপরিসীম। এগুলো ইতিহাসের অকাট্য দলিল। নিম্নে মুদ্রা ও শিলালিপির ব্যবহার বিশ্লেষণ করা হলো :
১. মুদ্রা : ইতিহাস জানার জন্য মুদ্রার গুরুত্ব অপরিসীম। মধ্যযুগের বাংলার বিভিন্ন শাসকদের শাসনামলের প্রাপ্ত মুদ্রা হতে সমকালীন বাংলার সমাজিক ও সাংস্কৃতিক অবস্থার যেমন চিত্র পাওয়া যায় তেমনি অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিষয়েও ধারণা পাওয়া যায়। সমকালীন সুলতানগণ সিংহাসনে আরোহণ করেই সুলতানের নাম ও তারিখ সম্বলিত মুদ্রার প্রচলন করতেন। কোনো কোনো মুদ্রা থেকে টাকশালের নামও জানা যায়। একই মুদ্রা বিভিন্ন অঞ্চলে আবিষ্কৃত হওয়ায় রাজ্য বিস্তার সম্পর্কেও সম্যক ধারণা পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার মাধ্যমে প্রায় ২৬ জন শাসকের নামাঙ্কিত মুদ্রা আবিষ্কৃত হয়েছে। এসব মুদ্রা ইতিহাস রচনায় অনেকটা নির্ভরযোগ্য তথ্য।
২. শিলালিপি : সাধারণ শিলালিপি বলতে পাথর বা | শিলাখণ্ডে উৎকীর্ণ বিভিন্ন বাণী বা তথ্যকে আবিষ্কার করা বুঝায়। | এসব আবিষ্কৃত শিলালিপি থেকে রাজ্যের সীমানা সহ বিভিন্ন রাজ্য | বিজয় ও বিভিন্ন ঘটনার যথার্থ তারিখ জানা যায়। এছাড়া | শিলালিপিসমূহ হতে মধ্যযুগের বাংলার অধিবাসীদের জীবন ধারণ | ও সংস্কৃতির পরিচয় পাওয়া যায়। ড. যদুনাথ সরকার বলেছেন, বঙ্গদেশে মুসলিম শাসনামলে সামান্য কয়েকটি শিলালিপি পাওয়া গেছে। এগুলো মসজিদ ও সমাধিগাত্রে আরবি ও ফরাসি ভাষায় লিখিত। এসব শিলালিপি থেকে বিভিন্ন রাজার রাজ্যের সীমানা, | রাজ্যজয় ও পরলোকগত ব্যক্তির জন্ম মৃত্যুর সাল ও তারিখ জানা যায় ।
উপসংহার : পরিশেষে বলা যায় যে, মধ্যযুগে বাংলার ইতিহাস জানার জন্য মুদ্রা ও শিলালিপির গুরুত্ব অপরিসীম। তারপরও বলা যায় যেসব তথ্য উপাত্ত পাওয়া যায় তা ইতিহাস